Advertisement
বাংলাদেশে নানান সময় নারীবাদ এবং নারীবাদী আন্দোলন নিয়ে আলোচনা শুরু হয়, আবার থেমে যায়। আলোচনা হয় মূলত ঘটনা কেন্দ্রীক। কোনো ঘটনা ও তার সাথে জড়িত বিষয়গুলোকে কে কীভাবে দেখছে সেটাই মূলত এই সময়গুলোতে ফুটে ওঠে। বাংলাদেশের সকল পরিসরেই নারীবাদের দার্শনিক বিভিন্ন ভিত্তি এবং তার মূল প্রবণতাগুলো নিয়ে সামগ্রিক আলোচনা ও পর্যালোচনা করার চর্চা এখন অব্দি সীমিত রয়েছে। এই শূন্যস্থান থাকায়, নারীবাদ নিয়ে সামগ্রিক আলোচনার বদলে নানান ইস্যুভিত্তিক চর্চা ও প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে জনপরিসরে জানা যায়। এসব থেকেই মানুষ নারীবাদ কাকে বলে, তা নিয়ে বিভিন্ন অনুমান করে নেয়। এতে নারীবাদ সম্পর্কে বিভিন্ন বিভ্রান্তি প্রচলিত হয়ে ছড়িয়ে যায়। সেসব অনুমানের মধ্যে কিছু একরৈখিক বক্তব্য আছে। বক্তব্যে থাকা বিভ্রান্তিগুলো দেখে মনে হতে পারে, নারীবাদ কোনো আন্দোলন নয়। কিংবা নারীবাদ একটি লড়াই হিসেবে সাধারণ শ্রমিক, মধ্যবিত্ত, ধার্মিক, আদিবাসী, কিংবা মাইনর কমিউনিটির অন্তর্গত সব ধরণের নারীদের অভিজ্ঞতা ও কন্ঠস্বরকে ধারণ করে না। বহুমাত্রিক দার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে নারীবাদ আন্দোলন যে একই সাথে কখনো বিশ্ববিদ্যালয় ও পেডাগোজিতে পুরুষতান্ত্রিক চিন্তা পদ্ধতি থেকে মুক্ত করার নলেজ প্রোডাকশন থেকে শুরু করে, আবার রাজপথের কারখানার শ্রমিক আন্দোলন কিংবা কৃষক নারীর অক্লান্ত পরিশ্রমের উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্যের দাবির আন্দোলন সামনে এগিয়ে নেয়, এই বহু মাত্রার উপলব্ধিটা সব বিভ্রান্তির চিন্তাধারায় অনুপস্থিত। নারীবাদ আন্দোলনের বিভিন্ন দর্শন প্রবণতার ধারা নিয়ে বোঝাপড়া অনুপস্থিত থাকায় যে বিভ্রান্ত ধারণাগুলো বিস্তার লাভ করেছে, তার মধ্যে কতখানি সত্যতা আছে? বিভিন্ন ঘটনার প্রতিক্রিয়ায়, এই অঞ্চলের নারীবাদীদের একটি বড় অংশই স্থুল আক্রমণকেন্দ্রিক ও ইস্যু কেন্দ্রীয় প্রতীকের প্রতিবাদী সত্তা হয়ে পড়েন। বাস্তবতা বিবেচনায়, বাংলাদেশের নারীবাদী বলে পরিচিত একটি বড় অংশই ক্ষমতাচ্যুত পালিয়ে যাওয়া স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার অবৈধ রাজনৈতিক ক্ষমতার সাথে লিয়াঁজো হয়ে উঠতে সংকোচ বোধ করেননি। এসব বাইনারিতে তৈরি হওয়া জনবিচ্ছিন্ন সংগঠন বা ব্যক্তিরা যতখানি আলোচনায় উঠে আসে, গণআন্দোলনের অংশীদার সাধারণ নারীরা সেভাবেই নিপীড়ন অন্যায়ের প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলেও জনসম্মুখে বিশেষ সম্মাননা ও স্বীকৃতি লাভ করেন না। গণআন্দোলনের অংশীদার সাধারণ সেই নারীদেরকেও নারীবাদী দৃষ্টিকোণের তাত্ত্বিক ও প্রায়োগিক দিক থেকে নারীবাদ আন্দোলনের অংশ মনে করা হয় না। বাংলাদেশে নারীবাদকে একটি নির্দিষ্ট শ্রেণীর, চিন্তার, সংস্কৃতির, পোশাকের শিক্ষাজীবী বা বুদ্ধিজীবী নারীদের নানান ঘটনার প্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা হয়, যাকে বাস্তবতাবিচ্ছিন্ন অপ্রাসঙ্গিক কিছু কথাবার্তার ও অর্থহীন কিছু কর্মসূচির সমষ্টি বলে সমাজে চিহ্নিত করা হয়।
কিন্তু কেন? নারীবাদ আন্দোলন কী কেবল ঘটনা কেন্দ্রিক, কেবল সুবিধাপ্রাপ্ত নারীদের চাওয়া পাওয়ার আলোচিত ক্যাফে? কিংবা এইসব ক্যাফের মধ্যে থেকে উঠে এসে যারা সমাজকে দেখতে যান, তারা কী সমাজের সাধারণ মানুষের কাছে স্বীকৃত হওয়ার মতন মর্যাদা সম্পন্ন না? কিংবা এইসব ক্যাফেতে কী বোরকা পরা বিবাহিত মধ্যবয়সী গ্রামীণ একজন সাধারণ নারী যেভাবে নারীর সংগ্রামকে বর্ণনা করেন ও নিজে লড়াই করেন, তার জন্য কোনো কর্ণার রাখতে হবে? নাকি, এই নারীর দৃষ্টিতে আত্মমুক্তির আন্দোলনকে গতি দেওয়ার জন্য নারীবাদের নতুন কোনো আলোচনা ও আন্দোলনের বৈঠক খুলতে হবে? নাকি, তেমন বৈঠক ইতোমধ্যেই আছে নারীবাদের কোনো না কোনো দার্শনিক প্রবণতায়? আমাদের দেশের নারীবাদী আন্দোলনের সূচনা প্রবাহ ভারতীয় উপমহাদেশের ধারা থেকে সমাজের দ্বন্দ্বগুলো সমাজের সুবিধাপ্রাপ্ত শ্রেণির প্রগতিশীল নারী ও পুরুষ সকলেই যার যার বোঝাপড়া দিয়ে মোকাবেলা করেছেন। নারীশিক্ষার অগ্রদূত রোকেয়া হোসেন সাখাওয়াতের সংগঠন, প্রতিষ্ঠান, ও মতাদর্শ বিবেচনায় তার প্রচেষ্টা কী উদারনৈতিক নারীবাদের ধারায় আমরা সংযুক্ত করতে পারি? তাঁর প্রচেষ্টার ধারাবাহিকতায় সম্ভ্রান্ত মুসলমান নারীদের জীবনে শিক্ষার যে অধিকার আদায় হয়েছিল, তার সুফল কী সেই সময়ের নিম্নবর্গের জেলে-চাষাদের সমাজের মুসলমান নারী কিংবা নিম্নবর্ণের দলিত শুদ্র হিন্দু নারীর শিক্ষা লাভের সংগ্রামেও প্রবাহিত হয়েছিল?
এই রকম সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আমরা আয়োজন করতে যাচ্ছি, "বাস্তব অভিজ্ঞতা ও তত্ত্বের সংলাপঃ বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলনের বিভিন্ন দার্শনিক দৃষ্টিকোণ"। আমরা নারীদের কাছে নারীদের জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা জানতে চাই, তাদের জীবনের সংগ্রামগুলোকে বুঝতে চাই। কারণ আমরা মনে করি, এমন অসংখ্য রকমের পরিচয়ের বাস্তব অভিজ্ঞতার কথার সাথে মানসিক একাত্ম বোধ করলে তার ভেতর থেকে শোষণের উপাদানগুলোকে আলাদা করা যাবে। নারীদের সামাজিক অবস্থানের নিজস্ব বাস্তবতায় তারা যে যেখানেই নিজেকে প্রকাশ করতে অংশ নিতে পেরেছেন, সেখানেই তাদের এমন সব অনুক্ত কথা আছে- যা পুরুষতান্ত্রিক মনোভাব চর্চাকারী সমাজ দমন করে রাখে। প্রসঙ্গত, শিল্পের ক্ষেত্রেও যেসব শাখাতে তাদের অংশগ্রহণ করার অনুমতি প্রাপ্তি হয়, সেখানেই তাদের কথা পাওয়া যায়। যেমনঃ প্রান্তিক গ্রামীণ নারীদের নিজেদের মনের কথাগুলোর প্রকাশের মাধ্যম হতে ওঠে লোকসংগীত, প্রবাদ প্রবচন, কিংবা নকশীকাঁথার গল্পভরা ছবি। এমন অসংখ্য আত্মপ্রকাশ সহ নারীর যেকোনো অবদমিত অভিজ্ঞতার গল্পকথা, যা সমাজে আলোচনার মতন গুরুত্বপূর্ণ ভাবা হয় না- তাতে নারীদের একটি দমিয়ে রাখা কন্ঠস্বর, অলিখিত ইতিহাস, ও প্রতিরোধের সংস্কৃতি আছে। সেই দমন করে রাখা কথাদের থেকে ইতিহাসকে তুলে আনে ও তাকে তত্ত্ব দিয়ে ব্যাখ্যা করে নারীবাদী আন্দোলন। নারীর সামাজিক প্রতিরোধের সংস্কৃতিকে বিকশিত করে নারীবাদ বিভিন্ন বৃহত্তর সামাজিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগ্রামকে সামনে এগিয়ে নেয়। প্রচেষ্টার এই পথগুলোকে দার্শনিক ভিত্তি দিতে নারীবাদীরা বিভিন্ন ধারার দর্শনকে তাদের বোঝাপড়ার জন্য নারীবাদে সংযোজন করেছেন। বহু ধারার দর্শন গ্রহণকারী একটি মতবাদী দল হয়ে দার্শনিক যেসব দৃষ্টিকোণ তারা সংযোজন করেছেন, তার মধ্যে অন্যতম হলো উদারতাবাদ, মার্ক্সবাদ, নৈরাজ্যবাদ, উত্তরাধুনিকতা, ইত্যাদি। নারী আন্দোলনের বিভিন্ন দার্শনিক ধারায় ও উপধারায় জন্ম হয়েছে বৃহৎ ধারার র্যাডিক্যাল নারীবাদ ও তার বিভিন্ন উপধারা, যেমন সাংস্কৃতিক নারীবাদ, পরিবেশবাদী নারীবাদ ইত্যাদি। পাশ্চাত্য হেজিমনির এই ধারা বা প্রবণতাগুলো বাংলাদেশের মতন দেশগুলোর নারীবাদ ও নারী আন্দোলনে প্রভাব ফেলে। এভাবে বাংলাদেশেও মাল্টিকালচারাল নারীবাদ বিকশিত হয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের নিজস্ব মাল্টিকালচারাল বাস্তবতার নিরীখে নৃতাত্ত্বিক ভাবে শোষণ-নিপীড়ন-সহিংসতার সহজ টার্গেট আদিবাসী নারী ও জনগোষ্ঠীর জন্য নারীবাদী আন্দোলন চলমান রাখতে হবে। সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান জনগোষ্ঠীর মধ্যে থেকে ইসলামী নারীবাদীদের মাধ্যমে মুসলমান নারীদের সংগ্রামের কথা বলা হয় ও মুক্তির নির্ধারিত পথের দাবি জানানো হয়। মার্ক্সবাদী, সমাজতান্ত্রিক, ও মাওবাদী দার্শনিক চিন্তাধারার নারীবাদীরা তাদের নেতৃত্বে ও সংগঠনে শ্রেণির প্রশ্নটি যুক্ত করে শ্রেণিগত শোষণের মুক্তির সংগ্রাম করার পাশাপাশি বিপ্লবে নারীর অংশ, নেতৃত্ব, মুক্তির পথ খুঁজতে সক্রিয় হতে চেষ্টা করেন। তাদের ধারায় কৃষক-শ্রমিক নারীদের কথা ও আন্দোলনকে বার বার মুক্তির প্রসঙ্গে মানুষের কাছে পৌঁছে দেন। এই প্রবণতার ধারাটি দিয়ে কৃষক শ্রমিক নারীদের সাথে চলমান শোষণ ও তাদের আন্দোলনকে পর্যালোচনা করা যায়। কৃষক শ্রমিক সহ অপর করে রাখা বাকি জনগোষ্ঠীদেরকেও, শ্রেণি চেতনা দিয়ে তারা ব্যাখ্যা করেন। র্যাডিক্যাল ধারার নারীবাদ এই শ্রেণিপ্রশ্ন বিবেচনা করে না, শোষণ ব্যাখ্যা করার জন্য ও মোকাবেলা করার জন্য এটি পুরুষতন্ত্রের সাংস্কৃতিক আধিপত্যকে প্রশ্ন করে। বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ধারার ও র্যাডিক্যাল ধারার নারীবাদের সাংস্কৃতিক আন্দোলনের যে প্রসার, তা মাঝে মাঝেই কর্মসূচির অনন্যতায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে। যেমনঃ পোশাকের স্বাধীনতা, গর্ভপাত, বিবাহ বিচ্ছেদে, দিনে ও রাতে- উৎসবে ও জীবিকায় নারীর, বিশেষ করে উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শিক্ষিত সুবিধাপ্রাপ্ত নারীদের জন্যই নিরাপদ পাবলিক স্পেসের দাবি। এই ধারার সাথে চলমান দাবিগুলো কিছু বিরোধী পক্ষের বিতর্ক মোকাবেলা করে নারীবাদ আন্দোলন সক্রিয় করে। বিতর্কগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো সমাজের গুরুত্বপূর্ণ একক পরিবার ধ্বংস হচ্ছে কি না, নারীদের উচ্চশিক্ষা ও কর্মসংস্থানের বিরুদ্ধে কিংবা নারীদের বাল্যবিবাহের পক্ষে ও পুরুষদের বহুবিবাহের পক্ষে আমরা নারীবাদ-বিরোধিতা করা কন্ঠস্বরদের শুনতে পাই। আসলে নারীবাদ বিরোধী সকলেই কী একই রকম পরিচয়ে আত্মপ্রকাশ করতে চাইবেন বা একই মনোভাব ধারণ করেন? তাদের কাছে নারীবাদের জন্য প্রস্তাবনা কী?
আমরা মনে করি বাংলাদেশের সমাজে থাকা মতবাদগুলো অনেকগুলো ধারা ও তাদের মধ্যে সংঘাত ধারণ করে, যেগুলোকে আত্মীকরণ ও সংশ্লেষণ না করলে একেক সময় একেকটি দলের অনুসারীরা দমন-পীড়ন করার বৈশিষ্ট্য চর্চা করে ফেলবেন নিজেদের সচেতন সিদ্ধান্তে বা অজান্তেই। এই দুই বিপরীতমুখী মনস্তাত্ত্বিক লড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে নারীর অধিকার আদায়, সুরক্ষা বিধান, কর্মসংস্থান নিশ্চিত, শিশু দিবা যত্নকেন্দ্র, স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়ে অনেক সংগঠন সক্রিয় আছে। এরা সকলেই নারীবাদী প্রবণতাকে ধারণ না করলেও বাংলাদেশের নারীবাদের ধারাগুলো এদের প্রত্যেককে শুরুতে ব্যাখ্যা করতে ও পরবর্তীতে আন্দোলনে সংযুক্ত করতে কিংবা না করতে পারেন। এদের মধ্যে কিছু কিছু নারীবাদী সংগঠক ও প্রতিষ্ঠান আছে যারা মুক্তির আন্দোলনকে প্রাধান্য দেয়, কিন্তু বেশির ভাগ সময়ই তা ব্যর্থ হয়। আমাদের বিগত স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও পুরুষতান্ত্রিক মনোভাবের একজন নারীই ছিলেন। রাজনৈতিক পরিসরের সংসদ থেকে তৃণমূলে যে পুরুষতান্ত্রিকতার মনোভাবের ক্ষমতাধারী নারী ও পুরুষরা প্রতিষ্ঠিত। সমাজের সব ইনফরমাল ও ফরমাল হায়ারার্কিতে, ব্যক্তি, পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্রের আদালত, পুলিশ, প্রশাসন সবকিছুই পুরুষতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাবে পরিচালিত হয়। বাজার ব্যবস্থাপনার মতন উৎপাদনের জরুরি বিষয়, স্বাস্থ্য খাতের দুর্নীতি অনিয়ম, শিক্ষা খাতের স্থবিরতা জটিলতা- সবকিছু মিলিয়েই বাংলাদেশের সামনে এখন পুরুষতান্ত্রিকতার বদ্ধতা থেকে বের হওয়ার চ্যালেঞ্জ আরো তীব্র। নারীবাদ আন্দোলনের দ্বারা এর রাষ্ট্র-অর্থনীতি-রাজনীতির কাঠামো ও সমাজের নিজস্ব সাংস্কৃতিক দ্বন্দ্বগুলোর সমাধান করার জন্য বাংলাদেশের নারীবাদের দার্শনিক প্রবণতাগুলোর এখনই বোঝাপড়া করে নেওয়া জরুরি বলে আমরা মনে করছি। আদিবাসী ধারা, পরিবেশবাদী ধারা, উত্তরাধুনিক ধারা, কর্তৃত্ববিরোধী নৈরাজ্যবাদী ধারা, ইসলামী নারীবাদের ধারা, মার্ক্সবাদী, সমাজতান্ত্রিক, মাওবাদী নারীবাদগুলোর ধারাসহ বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে জরুরি বহু দার্শনিক প্রবণতা বুঝতে হবে। এই সময়েও যদি নারীবাদের দার্শনিক প্রবণতা গুলো সম্পর্কে আমরা না জানি, তাহলে নানান বিভ্রান্তির দন্দ্ব সমাধান না করে একরৈখিক ভাবে ঘটনা নিয়ে ভুল বুঝাবুঝির ইস্যু ভিত্তিক আলাপ-আলোচনা করতে থাকবো। পারস্পারিক সংঘর্ষ কমানোর বদলে রাজনীতিবিদেরা নিজেদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে কিংবা ব্যবসায়ীরা নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে র্যাডিক্যাল নারীবাদ ও নারীবাদবিরোধী দলগুলোর সংঘাতগুলো মুখোমুখি ধরে রেখে দ্বন্দ্বগুলোকেই নারীবাদী আন্দোলন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে। দন্দ্বপ্রধান সেই বয়ান অনলাইন এলগরিদম দ্বারা বিতর্কিত ভাবে বেশি প্রচারিত হবে। এর বিকল্পে নারীবাদের বিভিন্ন দার্শনিক প্রবণতার ধারায় নারীবাদী আন্দোলন পর্যালোচনা ও চর্চা করা ভীষণ জরুরি। বাংলাদেশের নারীবাদী আন্দোলনটি যেন শ্রেণী, বিত্ত, লিঙ্গ পরিচয়, জাতিসত্তা, সংস্কৃতি, ধর্ম, স্বাতন্ত্রতা ও অন্যন্যতা সহ নারীবাদকে একটি প্রাসঙ্গিক আন্দোলন হিসেবে সামনে এগিয়ে যায়, নারীবাদের দার্শনিক বিভিন্ন ধারার দৃষ্টিকোণ থেকে সেই এগিয়ে নেওয়ার সামগ্রিক পরিকল্পনার বোঝাপড়া অব্যাহত রাখতে আমাদের এই আয়োজন।
Advertisement
Event Venue & Nearby Stays
University of Dhaka, Dhaka, Bangladesh