Advertisement
প্রাচ্যনাট প্রযোজনা ৩৭আখতারুজ্জামান ইলিয়াস'র "খোয়াবনামা"
নাট্যরূপ: মো. শওকত হোসেন সজিব
নির্দেশক: কাজী তৌফিকুল ইসলাম ইমন
👉২৮ নভেম্বর, ২০২৪ | বৃহস্পতিবার
👉 সন্ধ্যা ৭টা
👉 মূল হল, জাতীয় নাট্যশালা, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, সেগুন বাগিচা, ঢাকা।
অনলাইন টিকিট: https://shorturl.at/pN2cV
টিকিটের জন্য যোগাযোগ: ০১৩১৩৭৭৪৪০০
এবং শো'এর আগে টিকিট কাউন্টার থেকে প্রদর্শনীর টিকেট সংগ্রহ করা যাবে।
’খোয়াবনামা‘ প্রযোজনার বিস্তারিত: https://prachyanat.com/stage-drama/#play-khawabnama
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
কাহিনি সংক্ষেপ:
মেলা দিন আগেকার কথা। কাৎলাহার বিলের ধারে ঘন জঙ্গল সাফ করে বাঘের ঘাড়ে জোয়াল চাপিয়ে আবাদ শুরু করার দিনের এক বিকালবেলায় মজনু শাহের অগুনতি ফকিরের সঙ্গে মহাস্থান গড়ের দিকে যাবার সময় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির সেপাই সর্দার টেলারের গুলিতে মারা পড়ে মুনসি বয়তুল্লাহ শাহ্। কাৎলাহার বিলের দুই ধারের গিরিরডাঙা ও নিজগিরিরডাঙার মানুষ সবাই জানে, বিলের উত্তরে পাকুড়গাছে আসন নিয়ে রাতভর বিল শাসন করে মুনসি। দূরে কোথাও ভূমিকম্প হলে যমুনা বদলে যায়। বন্যায় ভেঙে পড়ে কাৎলাহারের তীর। মুনসির নিষ্কণ্টক অসিয়তে চাষীরা হয় কাৎলাহার বিলের মাঝি।
সময়ের আবর্তনে বিলের মালিকানা চলে যায় জমিদারের হাতে। মুনসির শোলোকে শোলোকে মানুষের স্বপ্নের ব্যাখ্যা করে বেড়ায় চেরাগ আলি ফকির। তমিজের বাপ শোলোক শুনে আর ঘুমের মধ্যে বিলে গিয়ে কাদায় পা ডুবিয়ে দেখতে চায় পাকুড়গাছের মুনসিকে। ভবানী পাঠকের সঙ্গে পূর্বপুরুষের জের টেনে বৈকুণ্ঠনাথ গিরি প্রতীক্ষা করে ভবানীর শুভ আবির্ভাবের। তমিজ দেখে জমির স্বপ্ন। আর চেরাগ আলির নাতনি কুলসুম খোয়াবে কার কায়া যে দেখতে চায় তার দিশা পায় না। তেভাগার কবি কেরামত শেষ পর্যন্ত আটকে পড়ে শুধুই নিজের কোটরে; সে নাম চায় বৌ চায় ঘর চায়।
কোম্পানির ওয়ারিশ ব্রিটিশের ডান্ডা উঠে আসে দেশি সায়েবদের হাতে। দেশ আর দেশ থাকে না, হয়ে যায় দু'টো রাষ্ট্র। দেশি সায়েবরা নতুন রাষ্ট্রের আইন বানায়, কেউ হয় টাউনবাসী, কেউ হয় কন্ট্রাকটর। আবার নিজদেশে পরবাসী হয় কোটি কোটি মানুষ। হিন্দু জমিদার নায়েব চলে যাওয়ার পরও আজাদ পাকিস্তানে জমি আর বিলের মানুষ নিজেদের মাটি আর পানির পত্তন ফিরে পায় না। পাকুড় গাছ নাই। মুনসির খোঁজ করতে করতে চোরাবালিতে ডুবে মরে তমিজের বাপ। ভবানী পাঠক আর আসে না। বৈকুণ্ঠ নিহত হয় হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গায়। জেলেরা নিজেদের ইচ্ছেমত মাছ ধরতে পারে না কাৎলাহার বিলে। কাৎলাহারের জেলেদের সাথে যমুনার জেলেদের মাছ ধরা নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়। সেখানে তমিজের হাতে খুন হয় এক জেলে। ক্ষমতাবান ভদ্রলোকের বাড়িতে চাকর হয়ে বিল দ্বন্দ্বের আসামী তমিজ পুলিশকে এড়িয়ে চলে কিন্তু তার কানে আসে কোথায় কোথায় চলছে তেভাগার লড়াই। নিরাপদ আশ্রয় ছেড়ে তমিজ বেরিয়ে পড়ে তেভাগার খোঁজে। ফুলজানের গর্ভে তমিজের ঔরসজাত মেয়ে সখিনাকে নিয়ে ফুলজান ঠাঁই নেয় কোথায়! কিন্তু মোষের দীঘিররপাড়ে শুকনা খটখটে মাঠের মাটিতে দাঁড়িয়ে কাৎলাহার বিলের উত্তরে সখিনা দেখতে পায় জ্বলন্ত হেঁসেলে বলকানো ভাত।
খোয়াবনামার জিম্মাদার তমিজের বাপের হাত থেকে খোয়াবনামা একদিন বেহাত হয়ে গিয়েছে। এখন সখিনার খোয়াব। খোয়াবনামা স্বপ্নের ব্যাখ্যাতা। কিন্তু স্বপ্নের ব্যাখ্যায় যা বিবেচ্য তা স্বপ্ন নয়, স্বপ্ন দেখা মানুষ।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
নির্দেশকের কথা
প্রাচ্যনাট তার স্বপ্নলগ্ন থেকেই গতানুগতিক গড্ডালিকায় গা ভাসাতে চায়নি। প্রতিনিয়ত তারা ভেঙ্গেচুরে নিজেদেরকে তৈরি করেছে নতুন করে নতুন ভাবনা নিয়ে। বিশ বছর শেষ করে পঁচিশ বছরের প্রাক্কালে একটা বিশাল প্রেক্ষাপটে কিছু করার প্রয়াসে “খোয়াবনামা” নিয়ে কাজ করার তাগিদ তৈরি হয়। এখনকার প্রজন্মের কাছে আখতারুজ্জামান ইলিয়াস দুবোর্ধ্য ধোঁয়াশা! বই পড়ার অভ্যাসই যেখানে দিন দিন আমাদের ছেড়ে চলে যাচ্ছে- সেখানে ইলিয়াসের লেখার সাথে নিজেদের পরিচিত করে তোলা এবং অধিকাংশ নবীন অভিনেতাদের নিয়ে নাটক নির্মাণ বেশ কষ্টসাধ্য।
এর মাঝে আশার কথা- আমরা যখন পান্ডুলিপি তৈরি করছি তখন নাগরিক নাট্য-সম্প্রদায় দর্শনীর বিনিময়ে নাটক প্রদশর্নীর ৪৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে নির্দেশকদের প্রনোদনা দেওয়ার ঘোষণা দেয়। আমি দল থেকে আবেদন করলে নির্বাচিত হই। আমাদের জন্য এই প্রণোদনা খুবই প্রেরণাদায়ক।
এই উপন্যাসটি মূলত দেশভাগের (১৯৪৭) এর কিছু পূর্ব এবং পরবর্তী সময়ের ঘটনা নিয়ে রচিত। এর কাহিনি বগুড়া জেলার একটি ক্ষুদ্র ও প্রত্যন্ত জনপদ নিয়ে বিস্তÍৃত। বগুড়া জেলার বাঙালি নদীর আশেপাশে কিছু গ্রামের মানুষের কাহিনির মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসের একটা অংশকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। এই ভূখন্ডে সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার বিভিন্ন স্তরে থাকা মানুষের যাপিত জীবনের এক ছবি আঁকা হয়েছে এই উপন্যাসে। নির্দেশক হিসেবে মঞ্চে উপস্থাপন করতে চেয়েছি সাধারণ মানুষের জীবন যাপন, শ্রেণী-বৈষম্য ও দ্বন্দ্ব, অসহায়ত্ব, ক্ষোভ, কাম, ধর্মীয় ও জাতিগত বিদ্বেষ, তেভাগা আন্দোলন, দেশভাগের ডামাডোল, গ্রামীণ জনপদের বিশ্বাস কিংবা কুসংস্কার। গ্রাম বাংলার আনাচে কানাচে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নাম না জানা মানুষের না বলা গল্প।
যে খোয়াবনামা একদিন বেহাত হয়ে গিয়েছে আমাদের হাত থেকে তারপরও খোয়াবই এগিয়ে নেয় মানুষকে। খোয়াব দেখা মানুষই নমস্য।
Advertisement
Event Venue & Nearby Stays
Bangladesh Shilpakala Academy, 14/3 Segunbagicha, Ramna,Dhaka, Bangladesh