আদিবাসী মনিপুরী সম্প্রদায়ের সর্ববৃহৎ রাস উৎসব

Wed Nov 05 2025 at 07:00 am to Thu Nov 06 2025 at 02:30 pm UTC+06:00

মৌলভিবাজার সিলেট | Dhaka

Syfur Rahman Sajib
Publisher/HostSyfur Rahman Sajib
\u0986\u09a6\u09bf\u09ac\u09be\u09b8\u09c0 \u09ae\u09a8\u09bf\u09aa\u09c1\u09b0\u09c0 \u09b8\u09ae\u09cd\u09aa\u09cd\u09b0\u09a6\u09be\u09df\u09c7\u09b0 \u09b8\u09b0\u09cd\u09ac\u09ac\u09c3\u09b9\u09ce \u09b0\u09be\u09b8 \u0989\u09ce\u09b8\u09ac
Advertisement
রাসপূর্ণিমা উৎসব বাংলাদেশের মনিপুরী আদিবাসীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যবাহী উৎসব। প্রতি বছর কার্তিক পূর্ণিমা তিথিতে এই উৎসব পালন করা হয়। রাস উৎসব উপলক্ষে আয়োজন করা হয় রাসনৃত্যের। রাসনৃত্য মনিপুরী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধ্রুপদী ধারার এক অপূর্ব শৈল্পিক সৃষ্টি।

বাংলাদেশে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জে মাধবপুরের শিববাজারে (জোড়ামণ্ডপে) ১৭৮ বছর এবং আদমপুরের তেতইগাঁওয়ে ৩৫ বছর ধরে মণিপুরিদের রাস উৎসব উদ্‌যাপিত হয়ে আসছে।
রাস উৎসবের দুটি পর্ব। দিনের বেলায় রাখালরাস আর রাতে মহারাস।
রাখালরাসের শুরুতে বালক কৃষ্ণ, বলরাম আর সখাদের গোচারণে যাবার অনুমতি দিতে গিয়ে মায়েদের অশ্রুমাখা বিলাপ গীত-মুদ্রায় রূপায়িত হয়। এরপর উপস্থাপিত হয় বাল্যকালে রাখালরূপে বৃন্দাবনে গরু চরানো কৃষ্ণের নানান কীর্তি। বকাসুরসহ নানান অসুরকে দমন করে কৃষ্ণবাহিনী। সেসব কাহিনি গীত-নৃত্য-বাদ্য-মুদ্রায় প্রায় পাঁচ ঘণ্টা সময় ধরে রূপায়িত হয়। রাখাল বালকদের পরনে থাকে নানান রঙের ধুতি, গায়ে নানান অঙ্গহার, মাথায় ময়ূরপুচ্ছে তৈরি ‘চূড়া’ আর হাতে বাঁশি।
রাখালরাসের মণ্ডলী বা মঞ্চ মাঠের মাঝখানে ভূমিসমতলে হয়ে থাকে, যাকে ঘিরে বৃত্তাকারে কলাগাছের বেষ্টনী। চারদিকে বসে মেলা। দেশের নানা জায়গা থেকে সওদাগরের দল এই এক দিনের জন্য আগের দিন থেকে এসে পসরা সাজায়। সঙ্গে থাকে মণিপুরিদের পোশাক, হস্তশিল্প, বইপুস্তক। রাখালরাস শেষ হয় গোধূলিবেলায়। কৃষ্ণ তাঁর গোপসখাদের নিয়ে গরুর পায়ের খুরে রাঙা আলোয় ধূলি ওড়াতে ওড়াতে ঘরে ফিরে আসেন। রাখালরাসের গল্পটিও এই এতটুকু সময়ের মধ্যে প্রতীকীভাবে সূচিত।
রাখালরাস শেষেই কিন্তু দিনের মেলা সাঙ্গ হয় না। লোকজনের কেনাকাটা, গল্পগুজব, খাওয়াদাওয়া চলতে থাকে। তারপর উন্মুক্ত মঞ্চে, সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। রাসের তাৎপর্য নিয়ে আলোচনা হয়, আধুনিক গান-নাচ-নাটক—এসবও বাদ যায় না।
রাত ১১টার দিকে শিববাজারের জোড়ামণ্ডপে (পরস্পর সংলগ্ন তিনটি মণ্ডপে) এবং অন্যদিকে তেতইগাঁওয়ে সানা ঠাকুরের মণ্ডপে (বর্তমানে সেখানেও দুটি ভিন্ন মঞ্চে রাস হচ্ছে) শুরু হয় এই উৎসবের মূল পর্ব মহারাস। মণিপুরিদের রাসলীলার অনেক ধরন। নিত্যরাস, কুঞ্জরাস, বসন্তরাস, মহারাস, বেনিরাস বা দিবারাস। শারদীয় পূর্ণিমা তিথিতে হয় বলে মহারাসকে মণিপুরিরা পূর্ণিমারাসও বলে থাকে।
পরম আরাধ্য এক সত্তার সঙ্গে মানুষে প্রেমাকুল আত্মার মিলনকে গীত-নৃত্য-বাদ্য-মুদ্রাসহযোগে প্রকাশ করার এক পরিবেশনাশিল্প রাস। শ্রীমদ্ভাগবত, চৈতন্যদর্শন কিংবা বৈষ্ণবীয় সহজিয়া ধারার দর্শনের সীমা ছাড়িয়ে যা মণিপুরি জনপদের নিজস্ব শিল্পপ্রকাশরীতির সঙ্গে মিলেমিশে নতুন এক অবয়ব নিয়েছে। আধ্যাত্মিকতার সঙ্গে যাপিত জীবনের বেদনা ও অনুভূতি যেখানে স্পন্দিত হয়ে ওঠে।
কৃত্যমূলক অন্যান্য পরিবেশনার মতো মানত বা মঙ্গলাকাঙ্ক্ষা রাস আয়োজনের মূল কারণ, কিন্তু তার শৈল্পিক আকাঙ্ক্ষাটিও কম নয়। তাই রাসে অংশগ্রহণের জন্য অনেক দিন ধরে সুযোগ্য ওস্তাদের কাছে সুচারুভাবে তালিম নিতে হয়। রাসের পরিবেশনায় রসভঙ্গের ভয়ও আছে। কোনো গোপিনী কিংবা বাদক যদি তার তাল ভঙ্গ করে, তাহলে আয়োজকের মনে শিল্পের প্রশ্নের ঊর্ধ্বে গিয়ে বাস্তব জীবনে কোনো অশুভের ভীতিও জাগে। রাসলীলার আয়োজনে অনেক আধুনিকায়ন ঘটেছে, আগে হ্যাজাকের আলোয় হতো, তারও আগে মশাল জ্বালিয়ে, কিন্তু সেই প্রতিবেশ একই। রাসে যে পোশাক পরা হবে, সেগুলো আগের দিন বাড়ির দেবতার সামনে নিবেদন করা হয়। তারপর সেগুলো গায়ে দেবার জন্য স্বীকৃত হবে। শ্রীমদ্ভাগবত গ্রন্থের একটি ছোট্ট বর্ণনাকে আকর ধরে এই রাসের গ্রন্থনা বলে গবেষকেরা মত প্রকাশ করেছেন। শাস্ত্রীয় মুদ্রার নৃত্য এবং উচ্চাঙ্গের গান আর বোলের সঙ্গে সঙ্গে এটি তার শরীরে লোক-সংযোগের সহজ আভরণও জড়িয়ে নিয়েছে। মণিপুরিদের নিজস্ব গায়কি, অভিব্যক্তির সংবেদনশীল সরলতা এখানে পরিবেশনাটির লোকায়তকরণে ভূমিকা রেখেছে।
মণিপুরে মৃদঙ্গ ও মন্দিরার পাশাপাশি বীণা, পাখোয়াজ, পেনা, বেহালা ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র ব্যবহৃত হয়, কিন্তু বাংলাদেশের মণিপুরিরা সাধারণত মৃদঙ্গ, মন্দিরা, শেলপুং, বাঁশি, হারমোনিয়াম, মইবং বা শঙ্খ, মাংকাং ইত্যাদি ব্যবহার করে থাকেন।
রাসের পোশাক ও অঙ্গহারে রয়েছে পশোয়াল, লেইত্রেং, কতনাম, খাংচেৎ, কতনাম, মেইখুম্বি, কুমিন, খবাকয়েং ইত্যাদি। গোপীরা গলায় মণিপুরি ঐতিহ্যবাহী সোনার হার পরে থাকেন।
মণ্ডপের মাঝখানে বৃত্তাকারে ভূমিসমতল কুঞ্জ বা মণ্ডলী স্থাপন করা হয়। মাটিতে আঁকা হয় নানান আলপনা। তার কেন্দ্রে একটি পট এঁকে তার মধ্যে কলসি, ধান, দূর্বা, নারকেল, কলা, খই, নাড়ু, ফুল, কীর্তনের গামছাসহ ঘট তৈরি করা হয়। সেই কেন্দ্র থেকে দুই কিংবা আড়াই ফুট ব্যাসার্ধ নিয়ে একটি গোলাকার মণ্ডলী তৈরি করে বাঁশ দিয়ে খুঁটি এবং ছোট বেড় দেওয়া হয়। সেই বেড়ার চতুর্দিক সজ্জিত করা হয় কাগজের আলপনা দিয়ে।
রাসলীলার শুরুতে থাকে সূত্রধারী বা নেপথ্য শিল্পীদের রাগালাপ, সঙ্গে মৃদঙ্গবাদন।
রাগালাপের পর কুঞ্জে প্রবেশ করে ‘বৃন্দা’। বৃন্দা প্রথমে গীত ও নৃত্যের মধ্য দিয়ে বৃন্দাবনকে সজ্জিত ও ‘পবিত্র’ করে। সাধারণভাবে যাকে মানত করে রাস আয়োজন করা হয়, সে-ই হয় বৃন্দা। বৃন্দাবন সাজায় বলে তার নাম বৃন্দা নাকি বৃন্দার নামেই বৃন্দাবন, এ বিষয়ে তথ্য মেলে না। বৈষ্ণবশাস্ত্রের বাইরে বৃন্দা মণিপুরিদের নিজস্ব সংযোজন। গানে গানে বৃন্দা জানায়, ‘আমি কৃষ্ণের প্রেম কাঙ্গালিনী, বৃন্দাবনে বৃন্দা দুর্ভাগিনী’। দুর্ভাগিনী বৃন্দা, কারণ সে কোনো দিন কৃষ্ণের দর্শন পায় না। বিরহান্ত কাহিনিতেও রাধা পায় কৃষ্ণের সাক্ষাৎ, প্রেম। কিন্তু বৃন্দা যেন কৃষ্ণপ্রেমে ব্যাকুল মনুষ্যসমাজের এক প্রতীকী চরিত্র। যার অশ্রু আর আত্মনিবেদনের মধ্য দিয়ে রাধাকৃষ্ণের প্রেম মর্ত্যের পৃথিবীতে মূর্ত হয়ে ওঠে।
বৃন্দার নৃত্যগীত সমাপ্ত হলে কুঞ্জে প্রবেশ করেন কৃষ্ণরূপী বালক। কৃষ্ণের নানান ভাবের রূপায়ণ ঘটে এই পর্বে। সেই ভাবের মধ্যে বিশেষভাবে প্রকাশ পায় রাধা-অনুরাগ। ‘উঠিতে কিশোরী, বসিতে কিশোরী, কিশোরী নয়নতারা...’। এ কিশোরী রাধা। নৃত্য শেষে কৃষ্ণ মণ্ডলীর পূর্ব দিকে বৃন্দাদেবীর সাজানো আসনে ত্রিভঙ্গ-ভঙ্গিমায় দাঁড়ায়। কৃষ্ণের নৃত্য শেষে শুরু হয় রাধানর্তন। কৃষ্ণের বংশীধ্বনি শুনে ব্যাকুল রাধা গায়, ‘বাঁশি বাজল, বাজল গো সখী, বিজন বিপিনে...’। পরে মণ্ডলীমাঝে গোপীদের প্রবেশ ঘটে। রাধা এবার কৃষ্ণের কাছে অভিসারে যাওয়ার জন্য বিভিন্ন সাজে সজ্জিত হতে শুরু করে। বৃন্দাবনে কৃষ্ণকে খুঁজতে গিয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ে রাধা, সখীদের কাছে বলে নিজের অসাড়তার কথা। কৃষ্ণ রাধা ও সখীদের ডাকে সাড়া দিয়ে রাসকুঞ্জে দেখা দেন এবং তাদের সঙ্গে নৃত্যগীতলীলায় মগ্ন হন। পর্যায়ক্রমে আসে রাধা ও সখী অভিসার, যুগলরূপ প্রার্থনা, মণ্ডলী সাজন, গোপীদের বিশিষ্ট রাগালাপ, ভঙ্গীপারেং, কৃষ্ণনর্তন, রাধানর্তন, আত্মসমর্পণ, পুষ্পাঞ্জলি, প্রার্থনা, আরতি, গৃহগমন ইত্যাদি পর্ব।
সবশেষে রাধা-কৃষ্ণের যুগলরূপের আরতি করা হয়। কিন্তু পরমাত্মা কৃষ্ণ তো জীবাত্মা রাধার সঙ্গে চির-একাত্ম হতে পারেন না। ‘খাঁচার ভিতর অচিন পাখি’র মতো তার আসা-যাওয়ার লীলা। তাই নিশান্তে কৃষ্ণের বচনানুসারে রাধা ও গোপিণীরা নিজ নিজ গৃহে ফিরে যায়। এই প্রত্যাবর্তন গভীর বেদনাবহ, পরমপুরুষের বিচ্ছেদের সুরে ঘেরা। রাধার চোখের জলে ফেরার সে পথ ধোয়া। রাসলীলায় কৃষ্ণসঙ্গ লাভের এই একটি রাত রাধার জীবনে একটি কালেরই প্রতীক, যার আধারে প্রতিটি বৈষ্ণব খুঁজে চলে পরমসত্তাকে অনুভবের স্পন্দন। তার আঁচ নিয়ে ভোরবেলা ভক্তবৃন্দ ফিরতে থাকে নিজ নিজ ঠিকানায়।

<3 <3 <3 <3 <3 <3 <3<3 <3 <3 <3

যাত্রা নভেম্বর ১৫ তারিখ শুক্রবার
একটি রিসোর্টে থাকা (ডিলাক্স)
দুপুর রাত ও সকালের খাবার ব্যাবস্থা
উৎসবের ১ম আয়োজন রাখাল নৃত্যতে উপভোগ
স্থানীয় মনীপুরীদের বাড়িতে আতিথিয়তা গ্রহণ
বিকেলে বিশ্রামের পর মেলায় ঘুরাঘুরি
রাত ১১ টায় মহা রাসের উৎসবে যোগ দেয়া
ফটোগ্রাফি
পরদিন সকালে নাস্তা করে ঢাকায় রওনা
(কারও এসি রুম লাগলে আগে থেকে জানাতে হবে)

গ্রুপঃ ১৫ জন
ইভেন্ট ফি - ৪০০০/- জনপ্রতি
বুকিং নিশ্চিত করতে ২০০০ টাকা জমা দেয়া জরুরী।
( টিকিট কেটে ফেলার পরে বুকিং মানি অফেরতযোগ্য এবং বিকাস করলে চার্জ প্রযোজ্য।)
যা যা থাকছেঃ
-ঢাকা -মৌলভিবাজার- ঢাকা ট্রেন / বাস
১ম দিন দুপুরের খাবার থেকে শুরু করে আসার দিন সকালের নাস্তা সহ ৩ বেলা খাবার।
- থাকা
- লোকাল ট্রান্সপোর্ট
- গাইড এর খরচ ।
এন্ট্রি এক্সিট
যা যা ভ্রমণে থাকছে নাঃ
_______________________
১) যাত্রা বিরতিতে কোনো খাবার
২) মিনারেল ওয়াটার
৩) উল্লিখিত ভ্রমণপথের তুলনায় অতিরিক্ত ঘুরে বেড়ানো বা গাড়ির অতিরিক্ত ব্যবহারের খরচ।

সাথে নিতে হবেঃ
_________________
- গামছা
- সানগ্লাস, হ্যাট, প্রসাধনী- প্রয়োজনীয় ঔষধ
- ক্যমেরা এবং এর এক্সট্রা ব্যাটারি
- চার্জের জন্য পাওয়ার ব্যাংক
- টর্চ লাইট /হেড ল্যাম্প (বাধ্যতামূলক)
- নিজ নিজ পানির বোতল ***

#** গুরুত্বপূর্ণ **
___________________________
# সব থেকে জরূরী, ট্রিপ ডিটেইলস টা মনোযোগ দিয়ে পড়া।
# প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা এক্সিডেন্টাল কোনো ইস্যুতে খরচ বেড়ে গেলে সেই বর্ধিত খরচ আমরা সবাই মিলেই বহন করবো। কারন প্রাকৃতিক দুর্যোগ/দুর্ঘটনা বলে কয়ে আসে না এবং এর উপর আমাদের কারো কোনো হাত নেই।
# প্ল্যানের মধ্যে নতুন কোনো প্ল্যানের আবদার না করার বিশেষ অনুরোধ।
# অপ্রয়োজনীয় সাহস দেখানো যাবেন না।
#**# নিশ্চিত যারা যাবো তাদের একটি গ্রুপ চ্যাটবক্স করে বিস্তারিত আলোচনা করব

যেকোনো প্রয়োজনেঃ
_____________________
সজীব - ট্রাভেলার্স হুইসেল
০১৭১১৯৭৮০৭২


Advertisement

Event Venue & Nearby Stays

মৌলভিবাজার সিলেট, প্রিন্স হেয়ার প্লাস, ঢাকা, বাংলাদেশ,Dhaka, Bangladesh

Sharing is Caring:

More Events in Dhaka

GRAIN TECH BANGLADESH-2025
Thu Nov 20 2025 at 10:00 am GRAIN TECH BANGLADESH-2025

International Convention City Bashundhara - ICCB

d e p r e s s i o n
Sun Nov 23 2025 at 03:23 pm d e p r e s s i o n

Dhaka, Bangladesh

Dhaka is Happening!

Never miss your favorite happenings again!

Explore Dhaka Events